সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড.মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সিলেট অঞ্চলে পলি হাউজ স্থাপনের মাধ্যমে অসময়ে সবজীর বীজ ও চারা করা উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে এবং অসময়ে বীজ ও চারা পেয়ে স্থানীয় কৃষকেরাও উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা মোতাবেক বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় এনে সিলেট অঞ্চলের কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি দ্বিগুন করতে হবে। নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে । এ জন্যে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নে তুরুকবাগে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), সিলেট কর্তৃক আয়োজিত রাজস্ব খাতের মাধ্যমে স্থাপিত “পলি হাউজের মাধ্যমে বিভিন্ন সেচ প্রযুক্তি স্থাপন ও প্রয়োগ” কাজের উদ্বোধন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে ও বিএডিসি সিলেট (সেচ)এর সহকারী প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন ডিএই সিলেট অঞ্চল সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. মোশাররফ হোসেন খান, ডিএই সিলেট এর উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা, বিএডিসি সিলেটের যুগ্ম পরিচালক (সার) ড.ইব্রাহিম খলিল, বিএডিসি সিলেট এর যুগ্ম পরিচালক কৃষিবিদ সুপ্রিয় পাল, বিএডিসি (সেচ)তত্বাবধায়ক প্রকৌ: প্রনজিত কুমার দেব, নির্বাহী প্রকৌশলী, (সেচ) প্রকৌশলী আবু আহমেদ মাহমুদুল হাসান, গোলাপগন্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী মান্নান,বাঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম।
মতবিনিময় সভায় কৃষিবিদ মো. মাশরেফুল আলম, উপজেলা কৃষি অফিসার, গোলাপগঞ্জ এবং সংশ্লিষ্ঠ উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা; মো.নাজমূল হাসান, উপসহাকরী প্রকৌশলী,(বিরানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) বিএডিসি, সিলেটের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, পলি হাউজ ভূক্ত কৃষক ও এলাকার কৃষক-কৃষণীসহ প্রায় শতাধিক কৃষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন ।
স্বাগত বক্তব্যে সহকারী প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান, জানান, উদ্বোধনকৃত এই পলি হাউজটিতে ৪টি পদ্ধতিতে সেচ দেওয়া যাবে- ডিপ, স্প্রিংকলার, ফরো ও ফগ। এখানে যে কোন সময়ে রোগবালাইমুক্ত উচ্চমূল্যে সবজি চাষসহ বীজ উৎপাদন করা যাবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাত, তাপমাত্র, কীটপ্রতঙ্গ, ভাইরাসজনিত রোগের মত প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবোলা করে উচ্চমূল্যের বীজ ও শাকসবজি, ফল ইত্যাদি উৎপাদন করা সম্ভব। এ পদ্ধতিতে পলিথিনের আচ্ছাদন থাকায় সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভিতরে প্রবেশে বাঁধা পায় এবং খরা অতি বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দূর্যোগেও ফসল অক্ষত থাকে। বৈশ্বিক মহামারী কাটিয়ে উঠতে বর্তমান সরকার কৃষিতে বরাদ্দ অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারবাহিকতায় এ বছর সিলেট অঞ্চলে ১১ কোটি টাকা রাজস্ব বরাদ্দ করা হয়েছে। রাজস্ব বরাদ্দের আওতায় নতুন করে ১৭ টি সেচযন্ত্র স্থাপন, ১৮৫০০ মি: পাইপ লাইন নির্মান, ১২ কি:মি খাল পুনঃখনন, ৪ টি স্কীমে স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতি প্রয়োগ, ০১ টি পলিহাউজ নির্মান, ৪ টি সুইসগেট পূর্নবাসন করা হয়েছে। এর মাধমে প্রায় ১০০০ হেক্টের জমি নতুন করে সেচের আওতায় এসেছে।