ঢাকাবুধবার , ৭ ডিসেম্বর ২০২২
  1. International
  2. অন্যান্য
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উৎসব
  6. খেলাধুলা
  7. চাকুরী
  8. জাতীয়
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম
  11. পরামর্শ
  12. প্রবাস
  13. ফরিদপুর
  14. বিনোদন
  15. বিয়ানীবাজার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গোলাপগঞ্জে লোহার শিকলে বেঁধে রাখা হলো সেই বৃদ্ধা মায়ের পা

ডাক বাংলা
ডিসেম্বর ৭, ২০২২ ১১:৪০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : গোলাপগঞ্জে এক বৃদ্ধা মাকে শীতের মধ্যে ঘরের বাইরে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার ছেলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের রায়গড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছেলের নাম জিলাল আহমদ খান (৪৫)। তিনি রায়গড় গ্রামের মৃত হারিছ আলীর ছেলে। ভুক্তভোগী মহিলার নাম আলেকজান বিবি।

ঘটনাস্থলে থাকা গোলাপগঞ্জ মডেল থানার এসআই পার্থ সারথী দাশের সাথে কথা হলে তিনি অভিযুক্ত ছেলের বরাত দিয়ে জানান, আমরা অভিযুক্ত ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে বলছে তার মা অসুস্থ। ঘটনার দিন দুপুরে তারা সপরিবারে বেড়াতে যাবেন বলে রোদ পোহানোর জন্য বৃদ্ধাকে বাইরে গাছের সাথে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখে যান। তাদের ফিরতে রাত হয়ে যায়।

তিনি বলেন, বর্তমানে আলেকজান বিবিকে তাহার বড় ছেলের কাছে রাখা হয়েছে। তবে ভরণ পোষণ খরচ বহন করবেন তিন ছেলে।

এ ঘটনায় আলেকজান বিবির একমাত্র কন্যা আনা বেগম জানান, কিছুদিন পূর্বে আমার মা বড় ভাইয়ের ঘরে অসুস্থ ছিলেন। বড় ভাই পয়সার অভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছিলেন না। মাকে চিকিৎসা করাতে সে সময় আমার ছোট ভাই জিলাল খান আমার সাথে যোগাযোগ করে। পরে আমি এসে জিলালের অনুরোধে ভালো চিকিৎসার জন্য তার ঘরে রাখি। সেসময় মাকে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করিয়েছে জিলাল। আমার জানামতে আমার ছোট ভাই জিলাল ও সকলের ছোট হোসেন আহমদ খান মায়ের একটু কিছু হলে তারা প্রায় পাগল হয়ে যায়। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা সম্পর্কে বলেন, মা পাগল ভাই কেন এটা করল বুঝতে পারছি না।

এ বিষয়ে আলেকজান বিবির বড় ছেলে ফুরুক আহমদের মেয়ে সহ নিকট আত্বীয় কয়েকজন বলেন, আলেকজান বিবি কয়েকদিন আগে ফারুক খানের ঘরে বিছানা থাকা অবস্থায় পালংয়ের রেলিংয়ে ধাক্কা দিয়ে মাথা ফাটান। এর পরে তারা ধারাবহর হাসপাতালে নিয়ে মাথা সেলাই করিয়ে আনেন। উনি দাঁড়াতে পারেন নাই। তাই তাহাকে নিরাপদ রাখতে এর পর থেকে প্রায়ই সময় বেঁধে রাখা হয়।

ফারুক খানের বড় মেয়ে সাম্মী বেগম আরোও জানান, আমি ছবি ও ভিডিও তুলেছি। তাছাড়া সবাইকে ফোন করে এসব ঘটনা জানিয়েছি। তাদের ঘরে কেন তাহার দাদীকে বেঁধে রাখা হত গণমাধ্যম কর্মীরা জিজ্ঞেস করলে সাম্মী বেগম কোন উত্তর দেন নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলেকজান বিবির বাপের বাড়ির আরেক আত্বীয় বলেন, এটা তো নতুন কিছু নয়। আমরা এক দিন তিনির ছেলে ফারুক খানের ঘরে চেয়ারে বাঁধা অবস্থায় আলেকজান বিবিকে দেখতে পাই। জিজ্ঞেস করলে মাথা ফাটানোর ঘটনাটি জানতে পারি। এসময় তারা বলেন, প্রায়ই সময় আলেকজান বিবির হুশ থাকে না। তাহার সুরক্ষার জন্য উনাকে বেঁধে রাখেন বলে আমাদের জানান ফারুক আহমদের পরিবারের সদস্যরা।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে বৃদ্ধাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার একটি ভিডিও আবু বক্কর সিদ্দিক নামে এক যুবক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

ঘটনার ভিডিও দেখে এলাকার স্থানীয় কিছু লোক ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে বৃদ্ধার বাড়িতে যান। ঐ সময় বৃদ্ধার ছেলেও বাহির থেকে স্বপরিবারে বাড়িতে আসেন। পরে সে তার মায়ের পায়ে বাঁধা শিকলের তালা খুলে দেয়।

এ ব্যাপারে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আব্দুর রহিমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি সে সময় ইউনিয়নে ছিলাম না। পরে এসে এসব জেনেছি। বৃদ্ধ মহিলা পুরোপুরি সুস্থ না থাকায় হাঁটা-চলা বা দাঁড়াতে পারেন নাই। অনেক সময় দাঁড়াতে বা হাটতে গিয়ে মাথা ঘোরে পড়ে যান। এজন্য বেঁধে রাখেন তাদের ছেলেরা। অনেকদিন থেকে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধের জেরে একজন আরেকজনকে ঘায়েল করতে এসব করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরোও জানান, বৃদ্ধার ভরণ পোষণের টাকা তাহার তিন ছেলে বহন করবেন। এমর্মে বৃদ্ধা আলেকজান বিবিকে আমরা তাহার বড় ছেলের কাছে রেখেছি।

এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনায় প্রত্যেকটি বক্তব্য অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকে কাছে সংরক্ষিত আছে।