করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজার ও মডার্নার টিকার অনুমোদন দেওয়ার পর স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির কর্মীদের প্রথম ধাপে টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের বেশির ভাগই টিকা নিতে দ্বিধা ও অপারগতা প্রকাশ করছেন।
সাধারণ জনগণকে টিকা নিতে উৎসাহিত ও ভয়ভীতি দূর করতে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি জনসম্মুখে টিকা নিয়েছেন। বৈজ্ঞানিকভাবে টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকরী বলে ঘোষণা করা হলেও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে স্বাস্থ্যকর্মী ও সম্মুখসারির কর্মীরা টিকা নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কম।
ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ডি ওয়াইন বলেন, নার্সিং হোমের বেশির ভাগ স্বাস্থ্যকর্মী টিকা নিতে অনাস্থা প্রকাশ করায় তাদের বেশ বিপাকে পড়তে হয়েছে। প্রায় ৬০ শতাংশ কর্মী প্রথম ধাপে টিকা নেবেন না বলে সরাসরি না করেছেন। দা লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড কাউন্টিতে প্রায় ৫০ শতাংশ সম্মুখসারির কর্মী টিকা না নেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ। অব্যবহৃত টিকা কীভাবে সংরক্ষণ করা হবে তা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে তারা।
নিউইয়র্ক অগ্নিনির্বাপন বিভাগের প্রায় ৫৫ শতাংশ কর্মী টিকা নিতে ইচ্ছুক নয় বলে সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে উঠে এসেছে।
প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন নাগরিকের জন্য টিকা সরবরাহ করা হলেও প্রথম ধাপে মাত্র ৩০ লাখ এই টিকা নিয়েছেন
শিকাগোর লরেটো হাসপাতালের প্রধান ক্লিনিক্যাল কর্মকর্তা ড. নিখিলা জুভেদি বলেন, ডিসেম্বরে তাঁর হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে এক জরিপ চালানো হয়। এদে দেখা গেছে, প্রায় ৪০ শতাংশ হাসপাতালকর্মী টিকা নেবেন না বলে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
ডিসেম্বরের প্রথম দিকে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ প্রায় ২ কোটি মার্কিন নাগরিকের জন্য প্রায় ৪ কোটি টিকা সরবরাহ করা হবে। কিন্তু রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য অনুসারে, প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন নাগরিকের জন্য টিকা সরবরাহ করা হলেও প্রথম ধাপে মাত্র ৩০ লাখ এই টিকা নিয়েছেন।
কায়জার ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন পরিচালিত সম্প্রতি এক জরিপে উঠে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রায় ২৯ শতাংশ কর্মী টিকা গ্রহণে নিজেদের দ্বিধার কথা প্রকাশ করেছেন। টিকা নিতে এত সংখ্যক মানুষের অপারগতার পেছনে মূলত টিকার কার্যকারিতা ও তা কতটুকু নিরাপদ, সে বিষয়টি প্রভাব রাখছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।