বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গার্ড অব অনার দেওয়ার পর রাজধানীর আরামবাগের দেওয়ানবাগ দরবার শরিফের পীর দেওয়ানবাগীকে দাফন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেছনে বাবে মদিনা দেওয়ানবাগ শরিফে তার স্ত্রীর পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে আরামবাগে বাবে রহমতে তার নামাজে জানাজা হয়।
মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে দেওয়ানবাগী পীর ৩ নম্বর প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি সেনাবাহিনীর ১৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টে ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি সর্বমোট ১১টি দরবার ও শতাধিক খানকাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
সোমবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি নিজ বাসায় সোমবার ভোরে স্ট্রোক করেন। পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দেওয়ানবাগ দরবারের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যানুযায়ী, দেওয়ানবাগী পীরের নাম মাহবুব-এ খোদা। তবে তিনি ‘দেওয়ানবাগী’ নামে পরিচিত। ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুর রশিদ সরদার।
মা সৈয়দা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নিজ এলাকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।
ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতান আহমেদ চন্দ্রপুরীর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন দেওয়ানবাগী পীর। এর পর তার মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন দেওয়ানবাগী। এর সুবাদে শ্বশুরের কাছ থেকে খেলাফত লাভ করেন।
তার কিছু দিন পর নিজেই নারায়ণগঞ্জের বন্দরে দেওয়ানবাগ নামক স্থানে একটি আস্তানা গড়ে তোলেন এবং নিজেকে সুফি সম্রাট পরিচয় দিতে থাকেন মাহবুব-এ খোদা। আস্তে আস্তে তার অনুসারী বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মতিঝিলের ১৪৭ আরামবাগে স্থায়ী দরবার গড়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেন দেওয়ানবাগী।