দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা মাহমুদুল হাসান।
একইসঙ্গে বেফাকের সিনিয়র সহভাপতি পদে মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী এবং মহাসচিব পদে মাওলানা মাহফুজুল হক নির্বাচিত হয়েছেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে বেফাকের সভাপতি পদ, গত ২৩ সেপ্টেম্বর মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসের পদত্যাগে মহাসচিব পদ এবং গত ৩০ নভেম্বর মাওলানা আশরাফ আলীর মৃত্যুতে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ শূন্য হয়।
শনিবার যাত্রাবাড়ীর কাজলায় কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ের মিলনায়তনে বেফাকের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম মজলিশে আমেলার (নির্বাহী কমিটি) বৈঠকে সদস্যদের গোপন ভোটে তারা নির্বাচিত হন বলে জানান সাবেক সাংসদ মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ।
বেফাকের এই নেতৃত্ব পরবর্তী কাউন্সিল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। সারা দেশে প্রায় ২০ হাজার কওমী মাদ্রাসার ১৩ হাজারের পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষা কার্য্ক্রম নিয়ন্ত্রক করে বেফাক। সারাদেশে কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ লাখের উপরে।
মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস দৈনিক ডাক বাংলা ডটকমকে বলেন, “মজলিশের আমেলার গোপন মতামতে এই মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়। বেফাকের অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন পরিচালনা করে তিন সহ-সভাপতির সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশন। ১৫৭ জন সদস্য এই গোপন ভোটে অংশ নেন।”
এর মাধ্যমে ছয়টি আঞ্চলিক শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ে গঠিত কওমী মাদ্রাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘আল-হাইওয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’র পরবর্তী নেতৃত্বও মনোনীত হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী আমৃত্যু বেফাকের চেয়ারম্যান ছিলেন। গঠনতন্ত্র অনুসারে বেফাকের সভাপতি পদাধিকার বলে জামিয়াতিল কওমিয়ার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। নতুন দায়িত্ব পাওয়া আল্লামা মাহমুদুল হাসান জামিয়াতিল কওমিয়ারও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়েছেন।
মাহমুদুল হাসান যাত্রাবাড়ী জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদারিয়ার মুহতামিম এবং গুলশান আজাদ মসজিদের খতিব।
এবং গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী জামিয়াতুল কওমিয়ার কো-চেয়ারম্যান হবেন।
তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশের মহাসচিব এবং হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর সভাপতি।
বেফাকের নতুন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক ইসলামী ঐক্যজোটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত শায়খুল হাদিস মাওলানা আজিজুল হকের বড় ছেলে। তিনি খেলাফত মজলিসের মহাসচিব এবং মোহাম্মদপুর জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার অধ্যক্ষ।
মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে মজলিশে আমেলার প্রথম অধিবেশনে আহমদ শফীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।