ঢাকাবুধবার , ২৬ আগস্ট ২০২০
  1. International
  2. অন্যান্য
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উৎসব
  6. খেলাধুলা
  7. চাকুরী
  8. জাতীয়
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম
  11. পরামর্শ
  12. প্রবাস
  13. ফরিদপুর
  14. বিনোদন
  15. বিয়ানীবাজার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘করোনায় বাইরে খেলেই ৫০% মূল্যছাড়! অনেক টাকা বাঁচিয়েছি’

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট, দৈনিক ডাক বাংলা ডটকম
আগস্ট ২৬, ২০২০ ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

এমন সুযোগ আবার কবে পাবো? প্রশ্নটা স্কটল্যান্ডের লিভিংস্টোনের ড্যানিয়েলে হুগেসের। তিনি হিসেব করে দেখেছেন, এ মাসে খাবার খরচ থেকে তিনি ১৫০ পাউন্ড বাঁচাতে পেরেছেন।

কয়েক লাখ মানুষের মধ্যে তিনিও একজন। তারা সবাই দেশটির সরকারের ‘ইট আউট টু হেলপ আউট স্কিম’-এ অংশ নিয়েছিলেন। আস্টজুড়ে সরকারের এই সেবা চলছে। সপ্তাহের সোমবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার রাতের খাবারের খরচের অর্ধেক পরিশোধ করতে হবে। বাকি অর্ধেক নিজের পকেটেই থেকে যাবে। এতে করে তিনি প্রতিবার খাবার থেকে ১০ পাউন্ড বাঁচাতে পেরেছেন। আগামী সপ্তাহের ব্যাংকের ছুটির দিন সোমবারে অফার শেষ হতে যাচ্ছে।
স্কিম চলাকালীন প্রতিদিনই বাইরে খেয়েছেন ২৪ বছর বয়সী ড্যানিয়েলে। একদম মাসের শেষ দিন পর্যন্ত খাবেন। বলেন, এ সুবিধার পুরোটাই নিতে চাই আমি। এটা সত্যিই ভালো অফার। প্রতিটা খাবারের হোটেল-রেস্টুরেন্ট খুব ব্যস্ত থাকলেও তাদের সেবা দারুণ ছিল। আমি মাঝে মধ্যেই সকালে নাস্তার জন্যে বেরিয়েছি। আবার ডিনারও করেছি। তবে তিন বেলার জন্যে বের হওয়াটা সহজ নয়, কারণ তখন পেটটাকে সামলানো বেশ কঠিন হয়ে পড়তো।

গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী বলেন, এই স্কিমের মেয়াদ বৃদ্ধি দেখতে চাই। আমি চাই না এটা এ মাসেই শেষ হোক। কারণ সঞ্চয়টা বেশ ভালো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ম বিষয়ক শিক্ষক হতে পড়াশোনা করছেন তিনি।

আমি সেপ্টেম্বরে বাইরে খেতে যাবো না। পুরো মাসই সম্ভবত বাসাতেই খাবো, বলেন ড্যানিয়েলে।
ইংল্যান্ডের হার্টেলপুলের ড্যানিয়েল ডেভিস-লুকের হিসাবে তিনি এ মাসে বাইরে খেয়ে মোট ২১৮ পাউন্ড বাঁচাতে পেরেছেন। সাথে ছিল তার ছয় বছর বয়সী মেয়ে লুনা। মেয়েটা এক খুদে ভোজনরসিক হয়েছে, বলেন তিনি। তারা দুজনই সপ্তাহের সোমবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার বাইরে খেয়েছেন। মাঝে মাঝে তিন বেলাতেই বেরিয়ে পড়েছেন।

এই লকডাউনের মধ্যে খাবারের স্কিমের কারণে অনেক টাকা সঞ্চয় হয়েছে তার। তাছাড়া এ সময় অন্য সময়ের মতো সাপ্তাহিক ছুটিতে বাইরে ঘুরত যাওয়ার খরচও নেই। বলেন, আমরা খাবারের চেইন শপগুলো থেকে দূরেই ছিলাম। ওখানে টাকাওয়ালা যান। তাছাড়া স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর ব্যবসা করা দরকার।

মাসের শুরুতেই এই স্কিম শুরু হয়। প্রথম তিন সপ্তাহের মধ্যে ৬ কোটি ৪০ লাখ বার স্কিম সুবিধা নেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল মানুষগুলোকে পাব ও রেস্টুরেন্টমুখী করা। দেশের সেবাখাতগুলো ধুঁকছে। তাদের একটু চাঙ্গা করতেই এই স্কিম। করোনাভাইরাসের লকডাউনের মধ্যে সেবাখাতগুলো হুমকির মুখে পড়ে। সরকার এই স্কিমের অধীনে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ দিয়েছে। রেস্টুরেন্টগুলো আবেদন জমা দিয়ে ভর্তুকি গ্রহণ করবে। বরাদ্দের অর্থ ৩-৫ দিনের মধ্যে আমার অ্যাকাউন্টে চলে এসেছে, জানান শেফ ও রেস্টুরেন্ট মালিক লিনসে স্কট। তার ম্যাসন বেলেস চালু রয়েছে লিনলিথগো এবং ডানব্লানে।

উচ্ছ্বিত কণ্ঠে তিনি বলেন, এটা সত্যিকার অর্থেই দারুণ এক পরিকল্পনা। অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মতো তার রেস্টুরেন্টও খোলা ছিল। তার পরিকল্পনা, একটা ফান্ড গঠনের মাধ্যমে নিজেই এই স্কিমের অফার চালু রাখবেন সেপ্টেম্বরেও। তবে প্রত্যেকের জন্যে স্কিমের হিসেবে ১০ পাউন্ড ডিসকাউন্টের পরিবর্তে ৫ পাউন্ড ডিসকাউন্ট দেবেন বলে ভাবছেন।

অনেকেই বলছেন, সরকার এই স্কিমের মেয়াদ বাড়ালে অনেক ভালো হবে। নয়তো আবারো ক্রেতার সংখ্যা কমে আসবে সেপ্টেম্বরে। তবে অনেক রেস্টুরেন্ট মালিক এবং কর্মীরা এর কুফলও দেখেছেন। ব্যস্ততা এবং ভিড়ের কারণে অনেক ক্রেতা বাজে ব্যবহারও করছেন।

নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ২১ বছর বয়সী অ্যামি এরকিন। বললেন, আমি এ খাতে কাজ করছি সাত বছর ধরে। কিন্তু ক্রেতাদের এমন আচরণ কখনো দেখিনি। নিজের শহর নরফোকের একটি পাবে কাজ করেন তিনি। এই স্কিমের পর খেতে আসা মানুষগুলো ২০ মিনিট অপেক্ষা করতেও অস্থির হয়ে পড়েন। তাই এই স্কিমের মাধ্যমে বহু রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করতে পারলেও কাজে যেতে আমার অস্বস্তি লাগে।

পোর্থকাওলের একজন ওয়েট্রেস জর্ডান গ্রিফিথ। তিনি ক্রেতাদের অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। বললেন, গত সপ্তাহে একজন ফোনে আমার সাথে বাজে আচরণ করেন। তিনি ২০ জনের স্থান বুকিং দিতে চাইলেন। আমি জানালাম আমাদের এখানে একসঙ্গে ২০ জনের ব্যবস্থা করা এখন অসম্ভব। তবে আমরা বাইরে টেবিল পেতে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারি। তিনি ফোনে বললেন আমি নাকি তার দিনটাই নষ্ট করে দিয়েছি।

ইউকে’র সেবা বিভাগের প্রধান কেট নিকোলস বলেন, মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস গড়ে দেয়ার কাজটি করেছে এই স্কিম। তবে তিনি জানান, নিবন্ধিত রেস্টুরেন্টগুলোর এক-তৃতীয়াংশ এখনো বন্ধ। বিশেষ করে যেসব শহর ও টাউন সেন্টারে মানুষের আনাগোনা কম।