ঢাকাWednesday , 26 August 2020
  1. International
  2. অন্যান্য
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উৎসব
  6. খেলাধুলা
  7. চাকুরী
  8. জাতীয়
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম
  11. পরামর্শ
  12. প্রবাস
  13. ফরিদপুর
  14. বিনোদন
  15. বিয়ানীবাজার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

করোনার ইতি ঘটা না পর্যন্ত আইসক্রিমে ধস

Link Copied!

মহামারি করোনাভাইরাস মুচড়ে দিয়েছে দেশের অর্থনীতি। গত মার্চে দেশজুড়ে করোনা ছড়িয়ে পড়লে স্থবির হয়ে পড়ে অর্থনীতির বিভিন্ন খাত ও উপখাত। প্রণোদনা ও আর্থিক সহায়তায় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও সচল হয়নি দেশের আইসক্রিমশিল্প। করোনায় ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলায় ধস নেমেছে এ শিল্পের পণ্য বিক্রিতে। এমনকি করোনার ইতি ঘটা না পর্যন্ত এ শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শুরুতে গুজব ছড়িয়েছিল ঠাণ্ডা থেকে করোনার বিস্তার ঘটে। সেই সময় ধপাস করে আইসক্রিম বিক্রিতে পতন ঘটে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আইসক্রিমের বড় ক্রেতা। এখন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা ও ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলায় আইসক্রিমের বিক্রি নেই। আইসক্রিমের ব্যবসা অনেকটাই মৌসুমভিত্তিক। এপ্রিল, মে ও জুন—এই তিন মাসে আইসক্রিমের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। মার্চ, জুলাই ও আগস্ট মাসে বিক্রি থাকলেও সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারি—এই চার মাস অফ পিক মৌসুম। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে শীতকালে আইসক্রিম তেমন একটা বিক্রি হয় না। সাত থেকে ১৬ বছর বয়সীরা আইসক্রিমের ভোক্তা। পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি আইসক্রিম খেয়ে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের আইসক্রিমশিল্পের বাজার এক হাজার ২০০ কোটি টাকার। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ। গ্রাম পর্যায়ের মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় এ শিল্পের প্রসার ক্রমেই বেড়েছে। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের সরবরাহ বাড়ায় ফ্রিজের ব্যবহার সুবিধা থাকায় আইসক্রিমের বাজার বাড়ছে। পাশাপাশি মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনও এই শিল্পকে এগিয়ে নিচ্ছে। ২০১৮ সালে লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ছয়টি কম্পানির মধ্যে তিনটির মার্কেট শেয়ার ৭৯ শতাংশ। প্রতিবছর ১৫ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধির আশা করা হয়। আইসক্রিমশিল্পের দুই প্রতিষ্ঠিত নাম ইগলু ও পোলার, যারা দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৬ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ধারণ করে। সারা দেশে ইগলুর ২০ হাজার আউটলেট রয়েছে। আব্দুল মোমেন লিমিটেডের ইগলুর মার্কেট শেয়ার ৩৮ শতাংশ। ঢাকা আইসক্রিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পোলারের মার্কেট সাইজ ২৮ শতাংশ।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা বেলেসিমো ও জানজি ব্র্যান্ড কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের আইসক্রিমের মার্কেট শেয়ার ১৩ শতাংশ। গোল্ডেন হার্ভেস্ট আইসক্রিম লিমিটেডের কোয়ালিটির মার্কেট শেয়ার ৮ শতাংশ। গোল্ডেন হার্ভেস্ট পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের লাভেলো আইসক্রিম ময়মনসিংহের ভালুকায় উৎপাদন শুরু করেছে। তারা পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনের আবেদন করেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের জিডিপিতে আইসক্রিম ইন্ডাস্ট্রিজের অবদান ০.০৬৪ শতাংশ। ভারতের জিডিপিতে এই শিল্পের অবদান ০.০৩১ শতাংশ। ২০১৬ সালে বিশ্বে আইসক্রিম উৎপাদন এক কোটি ৯৭ লাখ মেট্রিক টন হয়।
গ্র্যান্ডভিউ রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালে বৈশ্বিক আইসক্রিমের বাজার পাঁচ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অনুমান করা হয়েছে ৪.১ শতাংশ। ২০২৫ সালে এই বাজার দাঁড়াবে সাত হাজার ৮০৮ কোটি ডলারে। এশিয়া অঞ্চলের দেশ যেমন ভারত ও চীন আবহাওয়ার কারণে আইসক্রিমের বড় বাজার।

ইগলু আইসক্রিম, ইগলু ডেইরি অ্যান্ড ইগলু ফুডস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও গ্রুপ সিইও জিএম কামরুল হাসান বলেন, আইসক্রিম ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্রিতে ধস নেমেছে।

তিনি বলেন, আইসক্রিমের মূল ভোক্তা মূলত স্কুলের শিশু ও বাচ্চারা। করোনা পরিস্থিতিতে এখন স্কুল-কলেজ বন্ধ। মানুষ এখন ঘরমুখী। ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলার কারণে খুব বেশি প্রভাব পড়েছে। কভিড পরিস্থিতির উত্তরণ না হলে ব্যবসার উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই।

তিনি জানান, আইসক্রিমের বার্ষিক বাজার এক হাজার কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এবার ৪০ শতাংশ ব্যবসা হবে কি না সন্দেহ রয়েছে। আইসক্রিম খাত সংকটে পড়ার কারণে এই খাতের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানও ভুগছে।

কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের মার্কেটিং ও সেলস বিভাগের প্রধান জাকারিয়া বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে যে পরিমাণ আইসক্রিম বিক্রি হতো, এখন তার তুলনায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ আইসক্রিম বিক্রি কমেছে।’