ঢাকারবিবার , ২৬ জুলাই ২০২০
  1. International
  2. অন্যান্য
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উৎসব
  6. খেলাধুলা
  7. চাকুরী
  8. জাতীয়
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম
  11. পরামর্শ
  12. প্রবাস
  13. ফরিদপুর
  14. বিনোদন
  15. বিয়ানীবাজার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নামাজের দৃশ্য দেখে ইসলাম গ্রহণ

নিজস্ব প্রতিনিধি,দৈনিক ডাকবাংলা ডট কম
জুলাই ২৬, ২০২০ ৬:০২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

গ্রেটা মধ্য সত্তরের একজন বৃদ্ধা। একটি খ্রিস্টান পরিবারে তাঁর জন্ম। ইতালি থেকে তাঁর পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে এসে স্থায়ী হয়েছে। কয়েক বছর আগে মেয়ের হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন গ্রেটা। নিজের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে আমি ধার্মিকই ছিলাম। আমার মা-বাবাও ধার্মিক ও রীতিপরায়ণ ছিলেন। আমরা চার্চে যেতাম এবং ঘরেও উপাসনা করতাম। আমি একজন লুথেরিয়ান (খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের একটি শাখা) যুবককে বিয়ে করি। মা-বাবা এতে খুবই বিরক্ত হন। আমি কখনো রোমান ক্যাথলিক চার্চ ছেড়ে যাইনি। তবে বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে লুথেরিয়ান চার্চেও যেতে শুরু করি। লুথেরিয়ান চার্চে আমি হৃদয়ের উত্তাপ অনুভব করেছিলাম—যা আমাদের পরিবারে কখনো করিনি। কিন্তু আমার স্বামী যখন রবিবারে প্রার্থনায় অনিয়মিত হয়ে গেলেন, আমি খ্রিস্ট ধর্মের অন্য ধারার গির্জাগুলোয়ও যেতাম। স্বামী এতে কখনো বাধা দেননি। তবে সত্যি বলতে, আমি যে সত্য খুঁজছিলাম তা কোথাও পাইনি।

আমার সন্তানরা বড় হলো এবং বাড়ি ছেড়ে গেল। স্বামীও মারা গেলেন আর আমি সঠিক গির্জার সন্ধান এবং সত্যের কাছাকাছি পৌঁছানোর চেষ্টা করতে লাগলাম। একসময় স্থানীয় গির্জায় আমি স্থির হলাম। কেননা দীর্ঘ সময় গাড়ি চালাতে আমার ভালো লাগত না। সন্তানরা সবাই দেশ ছেড়ে যাওয়ায় গির্জার যুবকদের সহযোগিতাও আমাকে খুশি করেছিল। তবে সত্য জানার আগ্রহ অন্তরে থেকেই গেল।
আমি নিয়মিত প্রার্থনা করতাম। একদিন সন্ধ্যায় চার্চ থেকে ঘরে ফিরলাম এবং আমার অন্তর মহান স্রষ্টার সামনে মেলে ধরলাম। প্রার্থনা করলাম, তিনি যেন আমাকে সত্য পথ দেখান। তাঁকে বললাম, প্রভু! আমি সত্য জানতে চাই। যেন আপনার যথাযথ উপাসনা আমি করতে পারি। এটা ছিল আমার জীবনের একটি অকৃত্রিম ও সেরা প্রার্থনা। কয়েক সপ্তাহ পর মিসর থেকে আমার মেয়ে এলো। কয়েক বছর তার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়নি। আমি খুবই খুশি হলাম। তবে বিস্মিতও হলাম। কেননা সে হিজাব পরে ছিল। আশ্চর্য ব্যাপার হলো, তাকে দেখে আমার প্রার্থনার কথা মনে পড়ল। মনে মনে প্রশ্ন করলাম, মেয়ে কি আমার প্রার্থনার উত্তর হিসেবে দরজায় উপস্থিত হলো? তবে কয়েক দিন পর্যন্ত আমি তাকে হিজাব সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম না এবং সেও আমাকে কিছু বলল না।

একদিন সন্ধ্যায় আমি তাকে মুসলিম রীতিতে প্রার্থনা করতে দেখলাম। তাকে সিজদা করতে দেখলাম এবং দ্রুত দরজা বন্ধ করে চলে এলাম যেন সে বিরক্ত না হয়। মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে তার প্রার্থনা আমাকে গভীরভাবে মুগ্ধ করল। আবারও মনে হলো, আল্লাহ হয়তো তাকে আমার প্রার্থনার উত্তর হিসেবে পাঠিয়েছেন। রাতের খাবার শেষে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে এখনো খ্রিস্টান কি না? সে অস্বীকার করল এবং দীর্ঘ সময় ধর্ম নিয়ে কথা বলল। সে বাইবেল, কোরআন ও তার নোটবুক সামনে রেখে আলোচনা করল, সব কিছু খুলে বলল। ঈসা (আ.) ও মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কেও আলোচনা করল। আমি শুধু শুনে গেলাম। তখন আমার গাল বেয়ে অশ্রু ঝরে পড়ছিল। আমি নিশ্চিত হলাম আল্লাহ আমার প্রার্থনা কবুল করে মেয়েকে আমার কাছে পাঠিয়েছেন। আমি তাঁর কাছে সত্যের দিশা চেয়েছিলাম। এটাই ছিল আমার প্রার্থিত সত্য। আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হলাম। কথা শেষ হলে আমি মেয়েকে জড়িয়ে ধরলাম এবং বললাম, কেন এই কথাগুলো কেউ আমাকে আগে বলেনি। সঙ্গে সঙ্গে আমি ইসলাম গ্রহণ করলাম। আমি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ যে, বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার পর হলেও তিনি আমাকে সত্যের সন্ধান দিয়েছেন। একটাই আক্ষেপ কেন আগে কেউ আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলেনি। আবার এটা ভেবে সান্ত্বনা পাই যে, এটাই হয়তো মহান আল্লাহর ইচ্ছা ছিল। আলহামদুলিল্লাহ! আমি তার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট।’