লাদাখ সীমান্ত নিয়ে চীন-ভারতের বিরোধ তুঙ্গে। এশিয়ার এই দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক গিয়ে ঠেকেছে একেবারে তলানিতে। এমন এক পরিস্থিতিতে ভারতে সরকারি দরপত্রের প্রক্রিয়ায় চীনা সংস্থাগুলোর ঢোকার পথ কার্যত বন্ধ করে দিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। বৃহস্পতিবার দেশটির পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে বেশ কয়েকটি দেশের জন্য ছাড়ও দেওয়া হয়েছে। যে দেশগুলোর সঙ্গে ভারত উন্নয়নমূলক কাজ করছে সেই দেশগুলোর জন্য এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে। এই হিসেবে চীন-পাকিস্তানের কম্পনিগুলো একেবারেই আটকে গেছে। ভারত সরকারের এই বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে বেসরকারি খাত। তবে সরকারি খাতের সকল ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সেন্ট্রাল পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজস (সিপিএসই) এবং সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) প্রকল্পগুলো এই ধরনের বিধিনিষেধের মধ্যে থাকবে।
ভারত সরকারের দাবি, দেশের নিরাপত্তার ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছ। তবে যে দেশগুলোকে ভারত সাহায্য করে বা ‘লাইন অফ ক্রেডিট’ দেয়, সেগুলোকে এই তালিকা থেকে ছাড় দেওয়া হবে।
এক সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত রয়েছে এমন দেশগুলোর সংস্থাকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ (পিপিপি), রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, স্বশাসিত সংস্থার প্রকল্পে কাজ করতে গেলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে নাম নথিব্ধ করতে হবে। নথিবদ্ধকরণের জন্য সরকার একটি কমিটি তৈরি করবে। পাশাপাশি পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। এ জন্য ২০১৭-র আর্থিক বিধি সংশোধন করা হয়েছে।
নির্দেশে আরো বলা হয়েছে, যে দেশগুলোকে ভারত সাহায্য করে সেগুলোকে এই তালিকা থেকে ছাড় দেওয়া হবে। তবে এ ক্ষেত্রে করোনা মোকাবেলায় ওষুধ ও পিপিই ইত্যাদি সামগ্রীর ক্ষেত্রে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। সরকারি সূত্রের মতে, এর সুফল পাবে ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার। এই নির্দেশের টার্গেট যে চীন ও পাকিস্তান, তাতে সন্দেহ নেই।
এর আগে চীনা কম্পানির রেল ও সড়ক বিভাগের দরপত্রটি বাতিল করেছে ভারত সরকার। জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে টিকটকসহ ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে মোদি সরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ভাষণে বলেছেন, সৌর প্যানেল আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের অন্য দেশের ওপর নির্ভরতা কমানো দরকার। বিশেষ করে চীন থেকে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর.কে. সিং ঘোষণা করেছিলেন, সাইবার নিরাপত্তার হুমকির কারণে চীন ও পাকিস্তান থেকে বিদ্যুতের সরঞ্জাম আমদানি করবে না ভারত। আর এবার ভারতের সরকারি নিলামে অংশ নিতে চীনা কম্পানিগুলোর ওপর পরোক্ষভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো নয়াদিল্লি।