ঢাকারবিবার , ৫ জুলাই ২০২০
  1. International
  2. অন্যান্য
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উৎসব
  6. খেলাধুলা
  7. চাকুরী
  8. জাতীয়
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম
  11. পরামর্শ
  12. প্রবাস
  13. ফরিদপুর
  14. বিনোদন
  15. বিয়ানীবাজার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খেলাফত আন্দোলন থেকে হেফাজত।দুটি আবেগী ঝড়,শিক্ষনীয় ইতিহাস,শাহ মমশাদ আহমদ

নিজস্বপ্রতিনিধি,দৈনিক ডাক বাংলা ডটকম
জুলাই ৫, ২০২০ ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মেজর জিয়া হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক আলোকবর্তিকা হয়ে আবির্ভুত হলেন, পীরে তরীকত হযরত মুহামাদুল্লাহ হাফেজ্বি হুজুর (রহঃ), জাতীয় তওবার ডাক দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিলেন,অভুতপুর্ব সারা পড়ল সারা দেশব্যাপী, বটগাছ মার্কার পক্ষে সৃষ্টি হল গণজোয়ার, দেশের সর্বস্তরের আলেম উলামা নেমে পড়লেন মাঠে,মাত্র কয়েকদিনের পরিশ্রমে খানকা থেকে বের হয়ে আসা বুজুর্গ হযরত হাফেজ্বি হুজুর (রহঃ) নির্বাচনে তৃতীয় স্থান অধিকার করলেন,স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরসেনানী জেনারেল আতাউল গনী ওসমানীর মত জাতীয় নেতা চতুর্থ স্থানে ছিলেন।

নির্বাচনের পর হযরত হাফেজ্বি হুজুর (রহঃ) কে কেন্দ্রকরে ঝিমিয়ে পড়া ইসলামী রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হল,গঠিত হল খেলাফত আন্দোলন। হাফেজ্বি হুজুর হলেন আমীরে শরীয়ত,শায়খুল ইসলাম মাদানি রহঃ এর প্রায় সকল খুলাফা একবাক্যে তাকে মেনে নিলেন, আকাবের আসলাফের আমানত জমিয়তের কার্যক্রম স্থগিত করে (অনেকের মতে বিলুপ্ত করে) খেলাফত আন্দোলনে যোগদান করলেন,শায়খুল মাশায়েখ হযরত কৌড়িয়া (রহঃ) সহ আমাদের বুজুর্গগন দ্বীনের স্বার্থে কিরুপ মুখলেস ছিলেন, খেলাফত আন্দোলনে নিঃশর্ত যোগদানই জ্বলন্ত প্রমান।

কালক্রমে হাফেজ্বি হুজুর কে নিয়ে সুবিধাবাদী চক্র মেতে উঠলো, কেউ হুজুরের কাছে যেতে পারেনা,যা হবার তাই হলো, হযরত শায়খে কৌড়িয়া রহঃ এর নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নেতৃবৃন্দ খেলাফত থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করলেন, জমিয়ত আবার রাজনৈতিক ময়দানে কাজ শুরু করল, কিন্তু সেসময়কার আলোচিত সাংগঠনিক ব্যাক্তিত্ব,বুজুর্গদের হাতে গড়া বিরল প্রতিভা প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমান (রহঃ) সহ একটি বড় অংশ খেলাফতে রয়ে গেলেন।

আবার খেলাফত আন্দোলনে ভাংগন দেখা দিল,শায়খুল হাদীস রহঃ এর নেতৃত্বে প্রথমে খেলাফত আন্দোলন (শায়খুল হাদীস) , পরবর্তীতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস গঠিত হল, এ ইতিহাস আমাদের অনেকেরই জানা।

হাফেজ্বি হুজুর (রহঃ) জীবদ্দশাতে ই দেখে গেলেন দলের করুন পরিনতি। কতিপয় স্বার্থবাদীদের জন্য হুজুরের আলোকিত দ্বীনি কুরবানী হল কুলুষিত।

পক্ষান্তরে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন ছিল সম্পুর্ন অরাজনৈতিক, তবে তা নিয়ে রাজনৈতিক খেলা হয়েছে, আরও হবে,খেলাফত আন্দোলন নিয়ে যেখান থেকে ফন্দি ফিকির হতো সেখান থেকেই হেফাজত নিয়ে খেলা হচ্ছে,আমীরে হেফাজতের কাছে সঠিক বার্তা যাচ্ছেনা,তবে আশার কথা, আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এব্যাপারে সচেতন রয়েছেন, নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে হেফাজত ঝড়ে গা ভাসিয়ে দেননি,তবে খেলাফত আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপে নিতে হবে।

হেফাজত কোন শক্তিশালী সংগঠন নয়,মুসলিম জনতার ইমানী আবেগের এক ঝড় ছিল হেফাজত, ঝড়ের গতি এক পর্যায়ের থাকেনা, কৃত্রিমভাবে যত চেষ্টা করা হোক ঝড় আর ফিরে আসবেনা।

আল্লাহ না করুক,হেফাজতের পরিনতি খেলাফত আন্দোলনের মত হলে ও আমাদের হতাশ হবার নেই, ঝড়ের কবল থেকে বেচে থাকার আশ্রয় নিজেদের সংঘঠন মজবুত করতে হবে। মানুষের ঈমানী আবেগ কে সুদৃঢ় করে সমন্বিত আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইসলামী রাজনৈতিক শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্যের বিকল্প নেই।হেফাজত কেন্দ্রিক রাজনৈতিক খেলা বন্ধে এখনই ভাবা উচিত।

১- ইসলামী শক্তির কেন্দ্র ঢাকায় ফিরিয়ে আনা।
২-রাজনৈতিক অরাজনৈতিক ইসলামী শক্তির মজবুত প্লাটফর্ম গড়ে তুলা।

৩-হায়য়াতুল উলয়ার নেতৃত্ব ও ঢাকায় ফিরিয়ে আনা,ব্যাক্তিত্ব শুধু নয় , প্রতিষ্ঠানিক, ঈলমী প্রভাবশালী ব্যাক্তিকে দায়িত্ব দিয়ে ব্যাক্তিত্বে পরিনত করা।

জাতীয় নেতৃবৃন্দ যতদ্রুত বিষয়টি অনুধাবন করবেন,ততই জাতীর মঙ্গল হবে।
আল্লাহ তাওফিক দিন।

লেখক:শাহ মমশাদ আহমদ
সিনিয়র মুহাদ্দিস জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার,সিলেট।