যে বর্ণবাদ দূর করার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন নেলসন ম্যান্ডেলার মতো মহান নেতারা, সেই বর্ণবাদ এখনও পৃথিবীর অনেক মানুষের মনে বসত গেঁড়ে আছে। মাঝে মাঝেই সেই বর্ণবাদের ভুত যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। এবার যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় পুলিশের নির্যাতনে প্রাণ হারাতে হয়েছে এনবিএর সাবেক বাস্কেটবল তারকা জর্জ ফ্লয়েডকে! একটাই অপরাধ ছিল তার- গায়ের রং কালো! এই ভয়ানক ঘটনার পর বাস্কেটবল দুনিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
জর্জ ফ্লয়েডকে মেরে ফেলার একটি বীভৎস ভিডিও গতকাল বুধবার মিনেসোটার মিনিয়াপলিসের স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেল প্রকাশ করে। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুলিশ অফিসার জোর করে ফ্লয়েডকে তার গাড়ি থেকে টেনে-হিচড়ে বের করছেন। অন্য একজন অফিসার এরপর ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর তার হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছেন। ফ্লয়েড বারবার পুলিশের কাছে অনুরোধ করে বলছিলেন, ’দয়া করে আমাকে ছাড়ুন, আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’
কিন্তু দয়া হয়নি পুলিশদের। একপর্যায়ে স্থির হয়ে যায় ফ্লয়েডের দেহ। একটু পর ঘটনাস্থলে একটি অ্যাম্বুলেন্স আসে এবং অচেতন ফ্লয়েডকে নিয়ে চলে যায়। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশ এক বিবৃতি বলেছে, ’৪০ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েডের বিরুদ্ধে জালিয়াতির তদন্ত চলছে। তারই অংশ হিসেবে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে যায়। কিন্তু গাড়িতে থাকা ফ্লয়েড পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছিল।’ কিন্তু ভিডিওতে দেখা যায়, পুরো ঘটনার সময় ফ্লয়েড খুব শান্ত ছিলেন।
এই হত্যার প্রতিবাদে মিনিয়াপলিসের আফ্রো-আমেরিকানরা রাস্তায় নেমে আসেন। সারা দুনিয়ার বাস্কেটবল তারকারা সোশ্যাল সাইটে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। মিনিয়াপলিসের মেয়র জ্যাক ফ্রেই বলেছেন, ‘কালো বলে একজন মানুষকে মেরে ফেলা হবে, এটা মেনে নেওয়া অসম্ভব।’ এই ঘটনা ঘটিয়ে অবশ্য পার পাননি জড়িত পুলিশ অফিসার। এরই মধ্যে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দাবির মুখে এখন পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এতে বেশ কাজ দিচ্ছে ওই ভিডিও ফুটেজ।