পবিত্র ইদুল ফিতরে সাহাবায়ে কেরাম একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাতে বলতেন “تقبل الله منا ومنك
আল্লাহ তোমাদের ও আমাদের নেক আমল কবুল করুন,এ কথা সাহীহভাবে প্রমাণিত। ঈদ উপলক্ষে এরুপ দোয়া করে শুভেচ্ছা জানানোই সুন্নাহ।
আমাদের দেশে ঈদ মোবারক বলে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর রেওয়াজ চলে আসছে,উদ্দেশ্য তোমার ঈদ বরকতময় হোক,রমজান মাসে সম্পাদিত সকল নেক আমল মাকবুল হওয়ার ঘোষণা আসে ঈদের দিনে,ঈদের দিনের বরকত মানেই তো এবাদত কবুল হওয়া,ঈদের দিন বরকতময় হোক বলে দোয়াই করা হয়ে থাকে,সে দিকে লক্ষ্য রেখেই ঈদ মোবারক বলা সুন্নাহ বিবর্জিত নয়, ইনশাআল্লাহ।
ঈদের শুভালগ্নে সবার জন্য কামনা ,,তাকাবালাল্লাহ,ঈদ মোবারক।
মুসলিম জাহানের ন্যায় পরায়ন খলিফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজীজ রহঃ এর দরবারে কয়েকজন কিশোর ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে হাজির হলেন,তাদের মধ্যে উমার ইবনে আব্দুল আজীজ এর এক ছেলেও ছিলেন,সকলের গায়ে সুন্দর সুন্দর ঈদের জামা,কিন্তু খলিফার সন্তানের গায়ে পুরাতন একটি জামা,এ দৃশ্য দেখে খলিফা উমর কাদতে লাগলেন।
খলিফার নেকসন্তান পিতার পার্শ্বে এসে বললেন, হে,সম্মানিত পিতা,আপনি কাদছেন কেন?
উমর বিন আব্দুল আজীজ বললেন,তোমার পুরাতন জামা দেখে আমি কাদছিনা,আমি কাদছি তোমার মনভেঙ্গে যায় কিনা? তুমি মর্মাহত কিনা? সে ভয়ে।
প্রতিত্তরে ছেলে বললেন,হে মহান পিতা,মন তো তাদের ভাঙ্গবে যারা আল্লাহ চিনল অথচ তার নাফরমানী করল, পিতা- মাতা চিনল কিন্তু অবাধ্যতা করল,আমি তো এরুপ নই, আমি কেন অন্তরজ্বালায় ভুগবো? প্রকৃত ঈদ তো তাদের যারা আল্লাহর অনুগত্য করল।
সেই মমর্মস্পর্শী কথার সুত্রেই বলবো,হে প্রিয় ভাই, প্রত্যেক দিনই আমাদের ঈদের দিন হবে যদি আমরা দিনটি আল্লাহর অনুগত্যে কাটাতে পারি। এবাদতের মাধ্যমে মনের শান্তি লাভ করতে পারি।
মনে হতাশা ভাব রেখে ঈদ উদযাপন তো প্রকৃত ঈদ নয়,আল্লাহর রহমতে পরিপূর্ণ শান্তিময় অন্তর থাকাই তো প্রকৃত ঈদ।
সালাফদের মধ্যে অনেকেই বলতেন,আল্লাহর কসম,এবাদত করে আমরা যে প্রশান্ত চিত্তে আছি তা যদি শাসকরা জানত, আমাদের সাথে লড়াই করত।
ঈদের দিনকে ইবাদতময় করতে আমরা যা করতে পারি।
★ফজর নামাজান্তে গোসল করা
★তুলনামূলক ভাল জামা পরিধান করা
★আতর ব্যবহার করা
★মিষ্টি জাতিয় কিছু খাওয়া
★সাদকাতুল ফিতর আদায় হয়ে গেলেও সামর্থানুযায়ী সাদাকা করা
★যত ভোরে সম্ভব ঈদের নামাজ আদায় করা
★পিতা-মাতা জীবিত থাকলে তাদের সান্নিধ্যে থাকা,কবরবাসী হলে তাদের রুহের মাগফেরার কামনায় কেদে কেদে একাকী মোনাজাত করা,মন অনেক শান্ত হবে ইনশাআল্লাহ, কেননা ঈদে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের খুব বেশি মনে পড়ে।
★প্রতিবেশীদের খোজ নেয়া
★আত্নীয় স্বজনের খবর নেয়া
★বন্ধুদের সাথে অনলাইনে শুভেচ্ছা বিনিময়
★সম্মানিত উস্তাদদের দোয়া নেয়া
★সামর্থানুযায়ী দুঃস্থদের সহযোগিতা
★রমযানের গাম্ভীর্যতা রেখে ফরজ- সুন্নাত নামাজ আদায় করা
★কিছু সময় তেলাওত করে রমযানের অভ্যাস অব্যাহত রাখা
★প্রিয় সুরের তেলাওয়াত ও নাশীদ শুনা।
আল্লাহ তাওফিক দিন, আমিন।
লেখক:সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার,সিলেট