সিলেটের ঐতিহ্যবাহী দ্ধীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার মাদরাসার সুনামধন্য সিনিয়র মুহাদ্দিস বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ বলেছন যে,মহিমান্বিত রজনী লাইলাতুল ক্বাদার,হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। রমজানের শেষ দশকের বে- জোড় রাত্রি গুলোর মধ্যে আল্লাহ পাক লুকিয়ে রেখেছেন, মুল রহস্য বা হেকমত আল্লাহ পাকই জানেন।
দ্বীনের গবেষক উলামায়ে কেরাম এবিষয়ে বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন,
১- রমজানের শেষ দশকের সবগুলো রাতে মুসলমানদের এবাদত- বন্দেগীতে সক্রিয় রাখা,একই রহস্যের কারণে আল্লাহ পাক জুম’আ দিনের যে সময় দোয়া কবুল হয় গুপ্ত রেখেছেন, আল্লাহ পাকের নাম সমুহ যা স্মরণ রাখলে জান্নাত অবধারিত, আল্লাহ লুকিয়ে রেখেছেন।
২- ক্বাদার মানেই মর্যাদাপূর্ণ, মানুষের জীবনের সবগুরুত্বপুর্ন মর্যাদাকর বিষয়ই লুকিয়ে থাকে, যেমন জ্ঞান, রুজি যা অন্বেষণ করতে হয়, তারপর অর্জিত হয়,শবে কদরের মর্যাদা লাভে ও অন্বেষণ করতে হয়।
৩- এরাতে তাকদীর নির্ধারিত হয়,তাকদীর বিষয়টি সুক্ষ্ম, যা একমাত্র আল্লাহর জ্ঞানে আছে,তাক্বদীর নির্ধারনের রাতটিও আল্লাহ নিজ জ্ঞানে রেখেছেন।
৪ – সাহীহ হাদীসে বর্নিত, প্রিয় নবী সঃ শবে- ক্বাদারের নির্দিষ্ট রাত ঘোষণা করার জন্য বের হয়েছিলেন, পথিমধ্যে দু- জন মুসলমানের পারস্পরিক কলহ মিটিয়ে দেয়ার সময় লাইলাতুলকদর এর নির্দিষ্ট রাত কোনটি? নবী সঃ ভুলে যান,আল্লাহ পাক তার অন্তর থেকে উঠিয়ে নেন,এতে প্রতিয়মান হয়,মুসলমান পারস্পরিক সংঘাতে লিপ্ত হলে আল্লাহ পাক অনেক কল্যাণ, বারাকাহ উঠিয়ে নেন,,হে আল্লাহ আমাদের হেফাজত কর।
৫- আল্লাহ বলেন,তোমরা নামাজ সমুহের হেফাজত কর,বিষেশত মধ্যবর্তী নামাজের।
মধ্যবর্তী সময়ের গুরুত্বপুর্ন নামাজ কোনটা,? আল্লাহ লুকিয়ে রেখেছেন, আলেমগণ এব্যাপারে অনেক ব্যাখ্যা করেও থাকেন,ঠিক তেমনি গুরুত্বপূর্ণ লাইলাতুল কদর ও আল্লাহর লুকিয়ে রেখেছেন।
৬- গুপ্ত জিনিসের সন্ধান পেতে মানুষ উদগ্রীব থাকে,আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় একনিষ্ঠ এবাদতে মত্ব থেকে আল্লাহ প্রেমীরাও লাইলাতুলকাদারের জন্য উৎসাহিত থাকে,কাংখিত শবে- কাদারের আশায় এবাদতে স্বাদ বৃদ্ধি পায়,আল্লাহ প্রেমে বিভোর যারা,তারাই লোকালুকির মজা বুঝে।
৭- আল্লাহ পাক শবে- ক্বাদার লুকিয়ে রেখে সারা বছর নির্জনে এবাদতের কদর আমাদের অন্তরে লালন করার প্রতি প্রেরণা দিয়েছেন।
এমনি মহিমান্বিত রজনী আমাদের দ্বারে,তাই আসুন রমযানের শেষ দশকের প্রতি রজনী বিশেষত বে- জোড় রাতগুলির প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখি।
★পূর্ণ এতেকাফ সম্ভব না হলে প্রত্যেহ কিছুটা সময় নফল এতেকাফের নিয়তে মসজিদে কাটাই।
★অনর্থক সকল কাজ থেকে বিরত থাকি।
★ফরজ- সুন্নাতে নামাজের ইহতেমাম করি #اللهم إنك عفو تحب العفو ،،،বেশি বেশি পড়ি
★সকাল- সন্ধার মাসনুন দোয়া আদায় করি।
★তারাবিহ – বিতির – তাহাজ্জুদ ধীরস্থির প্রশান্তমনে আদায় করি।
★কুরআন তেলাওতে লিপ্ত থাকি।
★প্রত্যেহ সামান্য হলেও সাদাকা করি।
★একান্তে আল্লাহ নিকট কান্নাকাটি করি। আল্লাহ তাওফিক দান করুন।আমীন।
লেখকঃসিনিয়র মুহাদ্দিস- জামিয়া মাদানিয়া কাজির বাজার, সিলেট।