ঢাকামঙ্গলবার , ৫ মে ২০২০
  1. International
  2. অন্যান্য
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উৎসব
  6. খেলাধুলা
  7. চাকুরী
  8. জাতীয়
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম
  11. পরামর্শ
  12. প্রবাস
  13. ফরিদপুর
  14. বিনোদন
  15. বিয়ানীবাজার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আত্মশুদ্ধির মাস রামজানের দ্বিতীয় স্থর মাগফিরাত শুরু….

Link Copied!

পবিত্র রামজানুল মোবারককে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দশ দিন রহমতের, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের আর তৃতীয় দশক নাজাতের। আজ রামজানের প্রথম দশম দিন রহমতের শেষ হয়েছে। এ বছরের মতো ফুরিয়ে গেলো রহমতের দশক। রমজানের বিশেষ ইবাদতে মুমিন বান্দা আল্লাহর রহমতে সিক্ত হয়ে মাগফিরাত অর্জন করে, জাহান্নাম থেকে মুক্তির সনদ লাভ করে।

হজরত উম্মে সালমা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) প্রথম বছর রামজানের প্রথম দশকে ইতেকাফ করেন, অতঃপর মধ্যম দশকে, এরপর শেষ দশকেও ইতেকাফ করেন। তিনি (সা.) প্রথম দশকেও নফল ইতেকাফ করেছেন একান্তই আল্লাহর রহমত পাওয়ার আশায়। মনে রাখা চাই, মুমিন বান্দা যদি ইবাদতমুখী জীবন গঠন করতে পারে তাহলেই রহমত লাভে ধন্য হতে পারে। এক্ষেত্রে বলা যায়, আমাদের প্রিয় নবী মোহাম্মদ (সা.) চাইতেন, কোনো মুমিন যেন রামজানের আমল থেকে বঞ্চিত না হয়। নিজেকে অবশ্যই যেন ক্ষমা করিয়ে নিতে পারে। তাছাড়া এ সুযোগ থেকে যে বান্দা বঞ্চিত হবে তাকে তিরস্কারও করা হয়েছে।
হজরত কাব ইবন উজরা (রা.) বর্ণনা করেন, একবার নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা মিম্বারের নিকটবর্তী হও। আমরা হাজির হলাম। অতঃপর রসুলুল্লাহ (সা.) মিম্বারের প্রথম সিঁড়িতে পা মোবারক রাখলেন এবং বললেন, ‘আমিন।’ এরপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময়ও ‘আমিন’ বললেন। খুতবা শেষে মিম্বার থেকে নেমে এলে আমরা জানতে চাইলাম, হে আল্লাহর রসুল! আজ মিম্বারে ওঠার সময় যা শুনলাম, আগে কখনো তা শুনিনি। নবীজি (সা.) বললেন, জিবরাইল (আ.) এসেছিলেন। আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে পা রাখি তখন জিবরাইল (আ.) বললেন, ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি, যে রমজান পেল অথচ তার মাগফিরাত হলো না। আমি বললাম, ‘আমিন।’ দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময় জিবরাইল (আ.) বললেন, ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি, যার সামনে আপনার নাম নেওয়া সত্ত্বেও সে আপনার প্রতি দরুদ শরিফ পাঠ করল না। আমি বললাম, ‘আমিন।’ এরপর তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখতেই জিবরাইল (আ.) বললেন, ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি, যার সামনে তার পিতা-মাতা বা তাদের কেউ বার্ধক্যে পৌঁছেছে অথচ তারা তাকে জান্নাতে পৌঁছাতে পারল না (খিদমত করে জান্নাত হাসিল করতে পারল না)। এর জবাবে আমি বললাম, ‘আমিন।’

চোখের পলকেই যেন শেষ হয়ে গেল রাহমতের দিনগুলো। রামজানের পবিত্র সময়ে নিজেকে পবিত্র করার সুযোগ থেকে আমরা কেউই বঞ্চিত হতে চাই না। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, রমজানের প্রথম দশ দিনে আমরা নিজেকে কতটা রহমতস্নাত করতে পেরেছি? কিছুটা দুর্বলতা বা ঘাটতি হয়তো ছিল! তবে পরের দশকের মাগফিরাত আর নাজাতের সময়গুলো অতি গুরুত্ব দিয়ে নিজেকে ইবাদত এবং আমলে ডুবিয়ে রাখতে হবে।

রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন যে, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন: ‘প্রত্যেক নেক কাজের সওয়াব দশ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত প্রদান করে থাকেন। কিন্তু রোজা কেবল আমারই উদ্দেশ্যে রাখা হয় বলে এর প্রতিদান আমি স্বয়ং দিব।’
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন, ‘যারা রিপুগুলোকে দমন করে খাঁটি পথে অটল থাকবে, তাদেরকে অগণিত সওয়াব প্রদান করা হবে।’ (সূরা যুমার ১০)
রাসূল (সা.) আরও বলেছেন, ‘ছবর ঈমানের অর্ধেক আর ছবরের অর্ধেক রোযা। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন : রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আমার কাছে মৃগনাভীর সুগন্ধ অপেক্ষা অধিক প্রিয়। আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন : ‘আমার বান্দা কেবল আমার সন্তুষ্টির জন্যই পানাহার এবং স্ত্রী সহবাস বর্জন করেছে। আমি স্বয়ং এর বিনিময় বা সওয়াব প্রদান করব।’
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের নিদ্রা ইবাদতের তুল্য আর প্রত্যেকটি শ্বাস-প্রশ্বাস তাসবীহ পাঠের তুল্য এবং প্রার্থনা নির্ঘাত কবুলযোগ্য।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘পবিত্র রমজান মাস আসার সঙ্গে সঙ্গে বেহেশতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। শয়তানকে তার দলবলসহ বন্দী করা হয়। তখন ঘোষণা করা হয় : ‘হে কল্যাণকামী! শীঘ্র আস, এখন তোমাদের সময় অর্থাৎ কল্যাণ গ্রহণে দ্রুত অগ্রসর হও। ইহা তোমাদের জন্য সুসময়। আর হে পাপী, থাম- এখানে তোমার স্থান নয়। অর্থাৎ তোমাদের পাপের পথ রুদ্ধ হয়েছে।’ আর রোজার গৌরব ও মর্যাদা এই যে, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রোজাকে নিজের দিকে ইশারা করে বলেছেন : রোজা আমারই উদ্দেশ্যে রাখা হয় এবং আমি উহার পুরস্কার প্রদান করবো।’
রাসূল (সা.) আরও বলেছেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ।’ উম্মুল মোমেনিন হযরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘তোমরা জান্নাতের কপাটে খটখটি দাও।’ আরজ করা হল : কেমন করে, তিনি বললেন, ‘ক্ষুধার দ্বারা’। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রোজা অন্য সব ইবাদতের প্রবেশদ্বার।’
হে মহান মাবুদ, আমাদের রহমতের বারিধারায় সিক্ত করুন। আমিন।